এই শীতে ফরজ গোসল

শীতকালে গোসল করতে ভয় পায় এমন লোকের অভাব নেই। এটা আদৌও কোনো ধরনের ফোবিয়া কিনা তা আমার জানা নেই। স্বাভাবিক গোসলের কথা বলছি না, বলছি ফরজ গোসলের কথা!..
কনকনে ঠান্ডা, কাঁথা কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন আপনি। একটু আগে গোসল ফরজ হয়ে গেছে আপনার। হঠাৎ চোখ দু’টো বড় বড় করে আৎকে উঠলেন আপনি! হায়, এখন কি হবে! কিছুক্ষণ পর তো ফজরের নামাজ পড়া লাগবে! এমন ঠান্ডায় কিভাবে গোসল করবো আমি?
সেই মুহুর্তে আপনি গোসল থেকে বেঁচে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ওজর দাঁড় করাতে পারেন…
তার মধ্যে হলো—

এরকম কনকনে ঠান্ডার মধ্যে গোসল! অসম্ভব!
সমস্যা নেই। পরে কাযা পরে নিবো এখন, এস্তেগফার পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পরি!
আর এতো রাতে গোসল করলে বাবা-মা, ভাই/বোন… কি মনে করবে তারা! লজ্জায় মাথা কাটা যাবে আমার!
ফজরের নামাজ একান্ত পড়তে হলে তায়াম্মুম করে পড়ে নিবো।

চলুন এখন আপনার ওজর গুলো বিশ্লেষণ করি—
প্রথমত হলো, ঠান্ডা ওজর!
ভীষণ ঠান্ডায় গোসল করতে সমস্যা হলে গরম পানি দিয়ে হলেও গোসল করতে হবে। শুধুমাত্র প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে গোসল করবেন না, এমন ওজর ভিত্তিহীন। এটা কোনো ওজরই না।

দ্বিতীয়ত, এতো রাতে গোসল করলে লজ্জা লাগে, বাবা-মা, ভাই/বোন… কি ভাববে!
ঠিক এ কারণে আপনি গোসল করলেন না। এটাও কোনো ওজর না। আর ফরজ গোসলের ব্যাপারে আপনাকে লজ্জা করতে কে বলেছে?
অথচ যেটাতে লজ্জা করা উচিত সে ব্যাপারে আমরা নির্লজ্জ! তাই এটা ওজর বলে গন্য হবে না। গোসল করতেই হবে যতো লজ্জা লাগে লাগুক। এটা স্বাভাবিক বানিয়ে নিতে হবে।

তৃতীয়ত, তায়াম্মুম করা! এই ওজর তখনই উচিত হবে যখন ফরজ গোসল আদায় করতে গিয়ে জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা থাকে। কিংবা পানি পাওয়া না যায়। তখন তায়াম্মুম করে নিলেও হবে। কিন্তু পানিও আছে, আপনিও সুস্থ, অথচ গোসল না করে তায়াম্মুম করবেন এটা হবে না। পানি থাকলে অবশ্যই গোসল করতে হবে।

চলুন এখন জেনে নেই যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়—

গোসলের ফরজ তিনটি—

গোসলের সুন্নত

গোসলের আরও সুন্নাত

যার উপর গোসল ফরজ হয়েছে, সে যদি গোসলের একটা ফরজ বাদ দিয়ে শতবার গোসল করে, তবু তার শরীর নাপাক থেকে যাবে।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম
গোসলের পদ্ধতি —
গোসলের পূর্বে পেশাব করে নেওয়া উচিত। ফরজ গোসলের জন্য-

এরপর সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছিয়েছে কিনা যাচাই করতে হবে। যেসব স্থানে পানি পৌঁছায় না, যেমন, কানের ভাজ, নাভি, পায়ের আঙুল.. ইত্যাদি স্থান গুলোতে পানি পৌঁছাতে হবে।
পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজঁতে হবে।

এই নিয়মে গোসলের পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নাই, যদি ওজু না ভাঙ্গে। কেননা হযরত ‘আয়েশা রা. বলেন, নবী মুহাম্মদ সা. ফরজ গোসলের পর আর ওযূ করতেন না।
[তিরমিযী : ১০৩, মিশকাত : ৪০৯]

রাসূল সা. এক মুদ্দ (৬২৫ গ্রাম) পানি দিয়ে ওযূ এবং অনধিক পাঁচ মুদ্দ (৩১২৫ গ্রাম) বা প্রায় সোয়া তিন কেজি পানি দিয়ে গোসল করতেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অপচয় করা ঠিক নয়।
নারী হউক পুরুষ হউক সকলকে রাসূলুল্লাহ সা. পর্দার মধ্যে গোসল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

লিখেছেন

আরিফ আব্দুল্লাহ

লালমনিরহাট সরকারি কলেজের বাংলা ডিপার্টমেন্ট অনার্স ৩য় বর্ষে পড়াশোনা করছি।
আমার জীবন মরন সবকিছু স্রষ্টার জন্য

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

লালমনিরহাট সরকারি কলেজের বাংলা ডিপার্টমেন্ট অনার্স ৩য় বর্ষে পড়াশোনা করছি।
আমার জীবন মরন সবকিছু স্রষ্টার জন্য

Exit mobile version