নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হতেই পাঞ্জাবী,লুঙ্গী আর টুপি পরিহিত একজন মধ্য বয়সী লোক হুজুরকে খুঁজার উদ্দেশ্যে মসজিদে ঢুকলেন। তাকে দেখে কৌতূহল বশত জিজ্ঞাস করেই বসলাম,হুজুর তো নাই,কি দরকার হুজুরের?
তিনি বললেন, একজন নাকি তার জুতা ভুল করে নিয়ে গেছে। বলেই মসজিদ থেকে বেড়িয়ে আসলেন,আমিও তার পিছু পিছু বের হতেই, তিনি একজোড়া জুতোকে উদ্দেশ্য করে বললেন ঠিক এই রকমই জুতা ছিলো। আমি ভাবলাম হয়তো, কেউ পুরাতন জুতা রেখে তার নতুন জুতা জোড়া নিয়ে গেছে। কিন্তু না,,জুতা জোড়ার দিকে তাকিয়ে বেশ অবাকই হলাম কারণ ওগুলাও নতুন ছিলো। আমি তাকে বললাম,,আপনি তাহলে এগুলা নিয়ে যান। কিন্তু না!!
তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে, হাস্যজ্বল মুখে সেগুলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে, খালি পায়েই রাস্তায় দাঁড় করানো তার রিক্সায় উঠলেন, রিক্সাটি চালানোর জন্য। তার এমন আচারণে বেশ অবাক হলেও,পরক্ষণেই তার আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে আরও বেশ কয়েকবার তাকে জুতো জোড়া নেয়ার কথা বললাম।
কিন্তু তিনি হাসি মুখে “না” উত্তর দিয়েই সোজা রিক্সা নিয়ে টান দিলেন।
আমি শুধু তার রিক্সার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম, যেখানে অনেক শিক্ষিত লোকেরা দু টাকার লোভ সামলাতে পারে না, সেখানে এই লকডাউনে, এমন খেটে খাওয়া মানুষের ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রমে কেনা শখের জুতো জোড়া অন্য কেউ নিয়ে যেয়ে,অবিকল ঐ একই জিনিস রেখে গেলেও তার প্রতি বিন্দুমাত্র মোহ,লোভ কাজ করে না।
কতই না আকাশ-পাতাল পাথক্য,,,এই দুই চিন্তা -ধারায়,চেতনায় এবং সততায়।
আসলেই হেদায়েত অনেক বড় জিনিস,,,যা সবাই পায়না আবার যারা পায় তারা সত্যিই অনেক ভাগ্যবান।
মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সকলের উপর রহমত ও ক্ষমা বর্ষণ করুক এবং আমাদের সকলকে নেক হায়াৎ ও হেদায়েত দান করুক।
আমিন।
লিখেছেন
শাহরিয়ার_নাসিম।