আসমান থেকে আর ওহী আসবে না
‘উম্মতি! সালাত, সালাত’ বলতে বলতে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন প্রিয় নবী ﷺ। উপস্থিত সাহাবীদের চোখে তখনো বিস্ময়ের ঘোর। কেউই যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
যেই রাসূলকে ﷺ দেখলে সাহাবীদের নয়ন জুড়াতো, যেই রাসূলকে ﷺ এক পলক দেখতে না পেলে সাহাবীদের মন আনচান করতো, সেই রাসূল ﷺ তাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন চিরতরে তা কিভাবে সহ্য করবেন? উমরের (রা.) মতো বীর সাহাবী সহ্য করতে না পেরে নাঙা তলওয়ার হাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। তার মুখে বারবার উচ্চারিত হচ্ছিলো,
‘যে বলবে হযরত নেই তার ফয়সালা করবে তলওয়ার।’
একবার আবু বকর(রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর অবস্থা চিন্তা করেন তো। নবিজী ﷺ এর সবচেয়ে কাছের সাহাবী, অন্তরঙ্গ বন্ধু, যার শরীরের প্রতিটি রক্তবিন্ধু ছিলো নবিজী ﷺ এর জন্য নিবেদিত। সেই বেদনাময় মুহূর্তে তার মনের অবস্থা কেমন ছিলো ভাবতে পারেন?
সাহাবীদের একদম দিশেহারা অবস্থা দেখে আবু বকর(রাদিয়াল্লাহু আনহু) অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে তাদের সান্তনা দিতে লাগলেন। উমর(রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে শান্ত করে তাকে সঙ্গে নিয়ে উম্মে আয়মান(রাদিয়াল্লাহু আনহার) সাথে দেখা করতে গেলেন তিনি।
উম্মে আয়মানের(রাদিয়াল্লাহু আনহা) ঘরে যেতেই তিনি কান্না শুরু করে দিলেন। আবু বকর(রা:) বললেন,’আপনি কাঁদছেন কেন? আল্লাহর কাছে তো তার জন্য উত্তম প্রতিদান রয়েছে।’
উম্মে আয়মান(রা:) বললেন, ‘আমি এজন্য কাঁদছি না। আমি কাঁদছি কারণ……আসমান থেকে আর ওহী আসবেনা…..’
তার এ কথা শুনে আবু বকর(রা:) ও উমর (রা:) উভয়েই কাঁদতে লাগলেন।
[মিশকাতুল মাসাবীহ,৩য় খন্ড]
কী হৃদয় বিদারক দৃশ্য! প্রায় ১৪০০ বছর পরে যখন আমি এই দৃশ্য কল্পনা করছি তখন আমার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। বুকের ধুকধুকানি বেড়ে যাচ্ছে। লিখতে গিয়ে হাত কাঁপছে। তাহলে তাদের অবস্থা কেমন ছিলো যারা নিজ চোখে সেই দৃশ্য দেখেছে?