আযানের সময় কুকুর ডাকে কেন?
আযানের সময় কুকুর ডাকে কেন?
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমরা কুকুরের ডাক শুনবে শয়তান এর কাছ থেকে আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালার কাছে আশ্রয় চাও।
কেন আল্লাহ্র কাছে তখন আশ্রয় চাব ?
এটির কারণ কি ?
কারণ হচ্ছে এটি চমৎকার একটি বিষয় অর্থাৎ যখন শয়তান গুলু পালাতে থাকে, তখন কুকুর গুলু তাদের দেখতে পায় অর্থাৎ কুকুররা এমন কিছু দেখতে পায় যা আমরা দেখতে পাই না।
এই জন্য, শয়তানগুলু যখন পালায় তখন ঘেউ ঘেউ করতে থাকে এবং শয়তানকে কুকুর অতান্ত্য ঘৃণা করে এবং তাদেরকে তাড়িয়ে দিতে চায় অথবা দৌড়ীয়ে পালাচ্ছে এবং আপনি জানেন যে কুকুরের প্রবণতা হচ্ছে অপরিচিত কাউকে যখন দেখে তখন কিন্তু ঘেউ ঘেউ করে আওয়াজ করতে থাকে, চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে।
ওতো অপরিচিত, শয়তান তো কুকুর এর কাছে অপরিচিত, শয়তানতো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুরুত বা চেহারা নিয়ে বিভিন্ন সময় পালাতে যায়।
সে সময় তাদেরকে দেখে, তারা চিৎকার বা ঘেউ ঘেউ করতে থাকে আবার একটা বিষয় হচ্ছে কুকুররা তাদের যে সজাতীয় তারা আছে তাদেরকে জানিয়ে দিতে চায়, যে এই শয়তান যাচ্ছে বা কেউ একজন পালিয়ে যাচ্ছে অতএব তাদেরকে সতর্ক করার জন্য কুকুররা এই ভাবে চিৎকার বা চেচামেচি করতে থাকে বা ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে থাকে।
অতএব মৌলিক যেটা বিষয় রাসূল (সাঃ) বলে দিয়েছেন এবং আধুনিক বিজ্ঞানও সে কথা বলে যে, কুকুরদের চোখের শক্তি প্রচন্ড তারা অনেক এবং এ জন্য আপনি দেখেন যে কুকুর দিয়ে কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা গিরি কাজ করা হয়। একটু নিঃশ্বাস সুকে তারা বুঝতে পারে যে কোন দিকে অপরাধী গিয়েছে বা ঐ অপরাধী কোথায় অবস্থান করতে পারে।
কুকুর কিন্তু সুকে সেখানে চলে যেতে পারে এতটা পাওয়ার বা শক্তি আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা দিয়ে দিয়েছেন, সে জন্য কুকুররা গন্ধ পায় এবং কুকুররা তাদের দৌড়ে পালাতে দেখতে পায় তখন তারা এই আওয়াজ বা ডাকতে থাকে এবং এই বক্তব্যটি একটি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সালাতের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সালাতের জন্য ইক্বামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, সে কয় রাক‘আত সালাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
হাদিস নাম্বার: ৬০৮
কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ, যুহায়র ইবনু হারব, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ….. আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ শয়তান যখন সলাতের আযান শুনতে পায় তখন বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে যেন আযানের শব্দ তার কানে পৌঁছতে না পারে। মুওয়াযযিন যখন আযান শেষ করে তখন সে ফিরে এসে (সালাত আদায়কারীর) সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। সে পুনরায় যখন ইকামাত শুনতে পায় আবার চলে যায় যেন এর শব্দ তার কানে না যেতে পারে। যখন ইকামাত শেষ হয় তখন সে ফিরে এসে (সালাত আদায়কারীদের অন্তরে) সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে।
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
হাদিস নম্বরঃ ৭৪২
আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … মালিক ইবনু হুয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এবং আমার এক সাথীকে বললেনঃ যখন সালাতের সময় হবে তখন তোমাদের মধ্যে একজন আযান দেবে (অন্য জন আযানের জবাব দেবে)। পরে একজন ইকামত দেবে এবং যে তোমাদের মধ্যে বড় সে ইমামতি করবে।
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
হাদিস নাম্বার: ৬৭০
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সলাতের আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান সশব্দে হাওয়া ছাড়তে ছাড়তে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়ে যায়, যেন আযানের শব্দ তার কানে না পৌঁছে। আযান শেষ হলে সে আবার ফিরে আসে। সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে সে আবার পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়ে যায়। ইক্বামাত শেষে সে আবার ফিরে আসে এবং মুসল্লীর মনে অহেতুক চিন্তার উদ্রেক করে এবং বলে, উমুক কথা স্মরণ কর। সে এমন কথা স্মরণ করয়ে দেয় যা তার চিন্তায়ই আসেনি। এমনকি মুসল্লী কখনো ভুলেই যায় যে, কত রাক‘আত সলাত আদায় করেছে।
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
হাদিস নাম্বার: ৫১৬
আমরা কি বুঝতে পারলাম ?
তার মানে বুঝা যাচ্ছে যখন আযান দেয়া হয় তখন শয়তান পালাতে থাকে এবং যখন দেখতে পায় ও অপরিচিত কাউকে দেখলেই ডাকতে থাকে এই শয়তানকেও দেখে এই ভাবে ডাকতে থাকে। এই জন্য কুকুর এর আওয়াজ শুনলে আল্লাহ্র রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে বলেছেন
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা রাতে কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনতে পেলে ‘‘আউযুবিল্লাহ’’ বলবে। কেননা তারা (কুকুর ও গাধা) যা দেখতে পায় তোমরা তা দেখতে পাও না।
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
হাদিস নাম্বার: ৫১০৩
জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ রাত শান্তভাব ধারণ করার পর তোমরা কমই বাইরে বের হবে। কারণ (এ সময়) আল্লাহ তাঁর কতক সৃষ্টিকে (স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে) ছড়িয়ে দেন। অতএব তোমরা কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ ও গাধার ডাক শোনতে পেলে শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো।
আল-আদাবুল মুফরাদ
হাদিস নাম্বার: ১২৪৭