মাথার অল্প উপরে সূর্যের আনাগোনা। সেদিকে গালিবের কোনো খেয়াল নেই। ঘাম ঝরতে ঝরতে সাগরের চেহারা ধারণ করেছে জায়গাটা। চারিদিকে মানুষে কিলবিল করছে। তবুও তাদের কারও কোনো চেতনা নেই। সকলের কপালে চিন্তার ভাঁজ প্রকট। চারদিকে কতগুলো উলঙ্গ মানব দাঁড়িয়ে। কিন্তু কেউ কারও গোপনাঙ্গের দিকে তাকানোর জোঁ নেই। গালিবেরও একই অবস্থা।
গালিবের বিচার শুরু হয়েছে। অবাক হয়ে সে তাকিয়ে রইল! যাদেরকে খাইয়ে-দাইয়ে সে পরিপুষ্ট করেছে তারা সবাই তার বিরুদ্ধে আজ মামলা দায়ের করতে ব্যস্ত! সে চারদিকে তাকিয়ে রইল কারও সুপারিশের আশায়।
ঠিক তখনই তার মনে পড়ল কার সুপারিশ আমি পাবো?
আমার জুলুমের শিকার এই মানুষগুলা কি জীবনেও আমার পক্ষে সাক্ষী দিবে?
সে ভাবে, যেখানে আমার হাতও আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। সেখানে কাকে আমি সহোযোগিতার জন্য ডাকতে পারি! গালিব নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে চেহারার দাপটে তরুণীদেরকে সে অহরহ ধোঁকায় ফেলেছে সেই চেহারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে! এর বিরোধিতা করার সাধ্যি কার?
যে শরীরকে সতেজ রাখার জন্য শত শত কোটি টাকা খরচ করে দামি দামি খাবার খেয়েছে, সেই দেহ-ই নাকি তার বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। তার সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তার বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। তার মনে হচ্ছে, তখন কি জন্যে এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে কেটে ফেলিনি! কেটে ফেললে তো আমাকে আর এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হতো না। নিজের উপর বড্ড রাগ হচ্ছে তার। কিন্তু উপায় নেই কোনো। আজ যে সবকিছুই তার অধিন।
অসহায় গালিব জাহান্নামের কঠিন অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তার শরীর পুড়ে ছাই হয়ে যায় আবার পুনর্গঠিত হয়! তার মনে পড়ে দুনিয়ায় থাকতে সেও বিশ্বাস করতো না কোনো আখেরাত আছে বলে! সে বিশ্বাস করতো না স্রষ্টা আছে বলে! অথচ সেই স্রষ্টার অনুমতি ব্যতিরেকে একদন্ড নড়ার ডাহস কারও নেই। যে নবীকে উঠতে-বসতে গালি দিয়েছে আজ তার সুপারিশ ছাড়া তার বিচারই শুরু হতো না! এখন শুধুই আফসোস করা ব্যতিরেকে কিছুই করার নেই তার।
আজ তার জন্য শুধুই আফসোস!