আপনার পরিবার যখন আপনার প্রশংসা করে
আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশংসায় কতোগুলো হাদীস বর্ণনা করেন একবার ভাবুন। রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদব-আখলাক, আমলের প্রশংসায় কতো হাদীস শুধুমাত্র আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বর্ণনা করেন। এমনকি রামাদ্বান মাসে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যক্তিগত আমলও তিনি বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন:
“যখন রামাদ্বানের শেষ দশক আসতো, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদাতের প্রস্তুতি নিতেন), রাতে জেগে থাকতেন এবং পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে রাখতেন।”
[সহীহ বুখারী: ২০২৪]
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তারাবীহর নামাজের সৌন্দর্য সম্পর্কে আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন:
“এর সৌন্দর্য এবং দৈর্ঘ্য সম্পর্কে তুমি আমাকে আর প্রশ্ন করো না!”
[জামে আত-তিরমিজি: ৪৩৯]
এই হাদীসগুলো বলার মাধ্যমে আমি এখানে কোনো ‘ফিক্বহ’ –এর কথা বলতে চাচ্ছি না। আমি শুধু এটা দেখাতে চাচ্ছি, একজন স্ত্রী কিভাবে তাঁর স্বামীর ইবাদাতের প্রশংসা করছেন। স্বামীর গোপন ইবাদাতের একমাত্র মানব-সাক্ষী হলেন স্ত্রী, স্ত্রীর গোপন ইবাদাতের একমাত্র সাক্ষী হলেন স্বামী।
আপনার স্ত্রী বা আপনার স্বামী কি আপনাকে এভাবে প্রশংসা করেন?
আমরা যখন মসজিদে নামাজ পড়ি, সবার সামনে যখন আমরা ইবাদাত করি, তখন অনেক লম্বা সময় নিয়ে ইবাদাত করি। মানুষ আমাদেরকে এমন ইবাদাত করতে দেখে। কিন্তু, যখন আমরা একা হই, তখন আমরা কেমন ইবাদাত করি? আমাদের একাকীত্বের ইবাদাত হয় একমাত্র আমরা বুঝতে পারি, এর বাইরে যদি কেউ বুঝতে পারেন তাহলে তারা হলেন আমাদের পরিবার-পরিজন। বাইরের মানুষ আমাদের ইবাদাত দেখে যেভাবে মুগ্ধ হয়, আমাদের ঘরের মানুষও কি আমাদের ইবাদাত দেখে মুগ্ধ হয়?
ব্যাপারটি মুগ্ধ করা না করার বিষয় নয়, ব্যাপারটি হলো আমাদের গোপন আমল এবং প্রকাশ্য আমলের গুণগত মান নিয়ে।
জান্নাতীদের একটি গুণ হলো, তারা তাদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে ভয় পেতো।
বিয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষ তার মধ্যে থাকা খারাপ গুণগুলো লুকিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু, সেটা আর কতোদিনই বা লুকিয়ে রাখতে পারবে? একদিন না একদিন সেটা প্রকাশ পায়। যদি আপনার স্ত্রী বা আপনার স্বামী আপনাকে নিয়ে বলে, “এই মানুষের সাথে আমার বিয়ে হওয়ায় আমি ধন্য” তাহলে বুঝতে হবে আপনার মধ্যে সত্যিকারার্থে ভালো গুণ আছে। আপনার গোপন এবং প্রকাশ্য আমলগুলো প্রশংসনীয়।
আপনি আপনার পরিবারের সাথে এমন আচরণ করুন, যেটা আপনার পরিবার রামাদ্বানের সময় এবং রামাদ্বানের পরও মনে রাখে।
পরিবর্তনের রামাদ্বান (নবম পর্ব)
আরিফুল ইসলাম