আত্মহত্যা করে জীবনটা নষ্ট করতে চাইলে পথে বাস করুন। অন্য শহরে চলে যান। যেখানে কেউ চিনে না। স্মৃতিরা তাড়া করে করুক। কিন্তু পরিচিতরা তো আর তাড়া করতে পারবে না। যা ইচ্ছা করুন, কিন্তু দয়া করে আত্মহত্যা / সুইসাইড করবেন না। আল্লাহ চাইলে দুনিয়ায় মানুষ স্মৃতিভ্রষ্ট হতে পারে। সব ভুলে যেতে পারে। কিন্তু জাহান্নামে স্মৃতিরা কখনো মানুষের পিছু ছাড়বে না!
যেদিন জাহান্নামকে আনা হবে। যেদিন মানুষ (তার কৃতকর্ম) স্মরণ করবে। কিন্তু তখন এই স্মৃতিচারণ তার কী কাজে আসবে?
وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّى لَهُ الذِّكْرَى
এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে?
يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي
সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম!
فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ
সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিবে না।
সূরা আল ফজর- আয়াত নং ২৩-২৫
দুনিয়ার শাস্তি কম শাস্তি, আল্লাহর শাস্তি কঠিন শাস্তি। কম থেকে বেশি কষ্টের দিকে তবে কেন পালিয়ে যাওয়া?
হ্যাঁ, হয়তো আমি খারাপ, হয়তো দুনিয়াও খারাপ, কিন্তু এই খারাপ দুনিয়া থেকে জাহান্নামের খারাপ দুনিয়া তো একেবারেই কম ভয়ংকর।
আমি যদি পুরো জীবন পাপ করি আর মাত্র কোনো মুসলিমের দিকে তাকিয়ে একবার হাসি, তবে আমি একটা সুন্নাহ আদায় করলাম। ওই হাসিটাই আমার পুণ্য। অনন্ত একটা সাওয়াব তো আমার আছে।
এই একটা সওয়াবের ওপর ভরসা করে রবের মাগফিরাত আশা করা যায়। জান্নাতের আশা করা যায়। পাপ অগুণিত। বারবার হয়ে যাচ্ছে, লক্ষবার। কিন্তু প্রতিবার আর না করার চেষ্টার নামই তো ভালোমানুষি। তওবা করে ফিরে আসার একান্ত চেষ্টা চালিয়ে যান না।
কেউই নিজের সওয়াব দিয়ে জান্নাতে যেতে পারবে না। কেউই পারফেক্ট নয়। কেউই শতভাগ মুত্তাকি নয়। সবাই আল্লাহর রহমতের মুখাপেক্ষী। তবে কেন হতাশ হতে হবে?
কেন এমনভাবে হেরে যেতে হবে, যেখান থেকে ফিরে আসার কোনো পথ নেই! জীবনের সকল পেইন যেখানে অন্যান্য আযাবের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র!
দুনিয়াতে অন্তত ঘুমিয়ে পড়লে প্রিয়জনের অবহেলার কষ্ট, নিজের কৃতকর্মের অনুশোচনা, এমনকি শারীরিক যন্ত্রণাও মানুষকে কষ্ট দিতে পারে না!
অন্তত কয়েকঘণ্টার জন্য মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জাহান্নামের জগতে ঘুম বলে কোনো বস্তু নেই। সকল স্মৃতি, সকল কষ্ট, চারদিক থেকে আরো শক্তিশালী হয়ে ঘিরে ধরবে, সেখানে মুহূর্তেরও মুক্তি নেই।
সেখান থেকে কোথায় পালাবে?
তাই জীবনটাকে নষ্ট করতে চাইলে নানাভাবে করুন। সিরিয়া, ইয়ামেন, ফিলিস্তিন, কাশ্মীরে চলে যান, দুর্ভিক্ষ আর ক্ষুদার চরম কষ্ট দেখলে চিন্তা করবেন তখন। না হলে পথে পথে কাটিয়ে দিন আপনার মূল্যবান জীবন। ভিক্ষুকদের সাথে বাস করুন। পথশিশুদের সাথে। তাদেরকে কালেমা শিক্ষা দিন। বৃদ্ধ, অথর্ব ভিক্ষুকদের সেবা করতে থাকুন।
একেবারেই মরতে চাইলে কয়েকটা পেশাদার খুনী খুঁজে তাদের হাত কেটে দিন। একশটা খুনীর হাত কেটে দিয়ে তারপর মরুন না!
কয়েকটা মাদক ব্যবসসায়ীর পিছনে লাগুন। তাদের ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দিন। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে তারপর মরুন না! আপনাকে এমনিতেই ওরা মেরে ফেলবে। কিন্তু দয়া করে আত্মহত্যা / সুইসাইড করবেন না।
কারণ, জাহান্নাম থেকে আত্মহত্যা / সুইসাইড করে অন্য কোথাও যাওয়া যায় না। মুহূর্তের এ জীবন মুহূর্তে শেষ হয়ে যাবে, জাহান্নামের জীবন সহজে শেষ হবে না।
হুম সেটাই। এটা ছেলেমানুষি বাদে কিছুই না। আল্লাহ আমাদের সকলকে বোঝার তৌফিক দান করুক।
আমীন।
সংগৃহীত