Writing

আজকের তরুণ তরুণী

আজ আমরা যেন অশান্ত পৃথিবীর বাসিন্দা। পুরো পৃথিবী যেন আবার ঢেকে যাচ্ছে সে অন্ধকারে। যে অন্ধকার ছিল সেই জাহিলিয়াত যুগে। তাইতো বর্তমানে জাহিলিয়াত রূপে চলছে অন্যায়, অবিচার, মারামারি, হানাহানি, খুনাখুনি, লুটতরাজ, ধর্ষণ। শত চেষ্টায়ও মুক্তি মিলছে না অশান্তির সয়লাব থেকে। তাই হয়তো এ পৃথিবীর মানুষ একটু সুখের আশায় উড়ে যাচ্ছে চাঁদে, পা রাখছে মঙ্গলে! পৃথিবী ছেড়ে সেখানে বসবাসের চিন্তাভাবনা করছে। পৃথিবীর অশান্তি আর ভালো লাগছে না।

আর কত এভাবে! এখনো কী অশান্ত পৃথিবীকে শান্ত করার সময় আসে নি তোমাদের! যে যৌবনকালের ইবাদাত আমার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার নিকট অধিক থেকে অধিক পছন্দনীয় ও স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণযোগ্য। সে যৌবনের মূল্যবান সবটুকু সময় শয়তানের ধোঁকায় পড়ে অযথা অমূলক অন্যায়ভাবে কেন নষ্ট করে দিচ্ছো? কেন? কেন? কেন?

পৃথিবী সুন্দর ছিলো, পরিবেশও সুন্দর ছিলো! কিন্তু তরুন প্রজন্ম এখন একে ভয়ংকর বিষাক্ত পরিবেশে পরিণত করেছে। কিসের নেশার, কিসের আশায়, কোথায় ছুটছে আমাদের তরুণ তরুণীরা?

তারা কী আদৌ জানে কোথায় তাদের গন্তব্য?

কী ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য? কারা কাজ করছে তাদের পেছনে? কারা ইন্ধন যোগাচ্ছে তাদের আড়ালে?

প্রযুক্তির বদৌলতে সংস্কৃতির তথাকথিত মুক্ত বাতাসে অবগাহন করে সর্বত্র শুরু হয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আধুনিকতা মানে নারী জিন্স ও ফতুয়া পরিধান করে যত্রতত্র চলাফেরা করা, পুরুষ টাখনুর নিচে প্যান্ট বা পায়জামা পরিধান করা। আধুনিকতা মানে অবৈধ প্রেম, পরকীয়া ও সারারাত হারাম পানীয় পানে নারী পুরুষ একসাথে পার্টি উপভোগ করা। আধুনিকতা মানে সমস্ত শান্তি যেন ড্রাগ – সিরিঞ্জ পুশ করে অচেতন হয়ে পড়ে থাকা! আধুনিকতা মানে বেপরোয়া, আধুনিকতা মানে অসংখ্য অসৎ ইচ্ছা পূরণ হওয়া!

আড্ডা, ড্রাগ সেবন, হাই ভলিউম মিউজিক সহ একটি রাত আজকের তরুণ তরুণীদের খুব পছন্দ। ছেলেমেয়েরা কোথায় কার সাথে রাত কাটাচ্ছে তার খবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছেন না আধুনিক মা – বাবা

নিজ দেশের একদল তরুণ-তরুণীর টিকটক দেখলে ভীষণ আফসোস হয়। রুচিহীনতায় ভরপুর এসবে কিসের বিনোদন? কিসের শিক্ষা? আমার রাব্বের শপথ, অসুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারীরাই পারে এসবে সময় ব্যয় করতে। একমাত্র অসুস্থ মানসিকতার পাগলরাই পারে শয়তানের খুশিতে মহামূল্যবান সময় ব্যয় করতে।

আজকে তরুণ তরুণী এত্ত আধুনিক হওয়ার পরও স্বস্তির লেশমাত্র পাচ্ছে না কেন? কেন তারা আত্নহত্যার পথে পা বাড়ায়? কেন প্রতি বছর শত শত তরুণ তরুণী অকালে ঝরে পড়ছে তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কাছের বন্ধুর নির্মম আঘাতে। কেন খুন হচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকার হাতে? লাশ কেন পাওয়া যায় মেঘনা তীরে? টুকরো দেহ কেন পড়ে রয় গাছতলায়? নবজাতকের মতো নিষ্পাপ ফুলগুলো কেন কুকুরের মুখে, নালা নর্দমায়? আমার আদরের ছোট ভাই – বোন কেন নিজেদের আপন মা – বাবার হাতে খুন হয়? কেন? কেন? কেন?

অথচ ইসলামী সংস্কৃতি উপেক্ষা করে তরুণ তরুণীরাই ছিনিয়ে এনেছে পশ্চিমা সংস্কৃতি, ভারতীয় সংস্কৃতি। যেখানে তারা ফিরে পাচ্ছে তাদের কাঙ্ক্ষিত অবাধ স্বাধীনতা। নীড়ের বাঁধন ছিড়ে চলছে অজানা শংকায় পথ হারানো ভয়াবহ গন্তব্যে। যে গন্তব্যে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য মরণ ছোবল!

অনেক হয়েছে! এখন আর না! এবার একটু থামো। থামো না একটু। খানিককাল নীরবে, নিভৃতে ভাবো। আল্লাহ তোমাদের যে জীবন-যৌবন উপহার দিয়েছেন, সে জীবন-যৌবন দুনিয়ার কোন মরীচিকার নেপথ্যে ব্যয় করছো?

ফিরে এসো তরুণ তরুণী, আজকের তরুণ তরুণী!
তাওবা করো তাড়াতাড়ি! অন্তরকে ঈমানের নূরে আলোকিত করার সময় আর নাও পেতে পারো!

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture